সরকারপন্থী সমমনা ও ধর্মভিত্তিক ছয়টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘লিবারেল ইসলামিক জোট’।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই জোট আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে।
নতুন এই রাজনৈতিক জোটে ড. শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারীকে চেয়ারম্যান ও মিছবাহুর রহমান চৌধুরীকে নির্বাহী চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র এবং বাকি দলগুলোর প্রধানদের কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। কো-চেয়ারম্যান ফারাহনাজ হক চৌধুরীকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জোটের অন্য সঙ্গীরা হলেন— আশিক্কীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাহ সূফী সৈয়দ আলম নূরী আল সুরেশ্বরী, বাংলাদেশ জনদলের (বিজেডি) চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ ভাসানী) চেয়ারম্যান মো. হাসরত খান ভাসানী।
নতুন রাজৈনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়া বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারীর সভাপতিত্বে ছয় দলীয় জোটের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী।
জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘লিবারেল ইসলামিক জোটের নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে বিদেশি হস্তক্ষেপ রুখে দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করবো। কোনও বিদেশি শক্তির সেখানে নাক গলানোর কিছু নেই।’
দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। মুক্তিযুদ্ধের পর যে পরাজিত শক্তি ও সরকারের ভেতরের বিশ্বাস ঘাতকরা জাতির পিতাকে হত্যার পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল, এই ঘাতকদের উত্তরসূরিরা আবারও একজোট হয়েছে। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।’
লিবারেল ইসলামিক জোট প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে অনেক উন্নয়ন হওয়া সত্ত্বেও সরকারের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা একদল দুর্নীতিবাজ, অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও আমলারা দেশের বিপুল অঙ্কের টাকা বিদেশে পাচার করেছে।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে তারা বলেন, লিবারেল ইসলামিক জোট দেশে অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়, তবে কেয়ারটেকার পদ্ধতি নয়। সব রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষ থেকে ৯ দফা দাবি পেশ করা হয়। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে:
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য স্বল্পমূল্যে ক্রয়ের সুবিধা প্রদান করতে হবে; সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হোতাদের গ্রেফতার ও মূল্য বৃদ্ধিকারী মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করতে সব রাজনৈতিক দলকে সুযোগ ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে; ডেঙ্গু মশা নির্মূল বা নিয়ন্ত্রণ করতে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করতে হবে; পলিথিন ব্যাগ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবহারকারীদের গ্রেফতার করে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সিলগালা করে দিতে হবে; দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপ-প্রচারকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে; পরিবর্তিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের আরও সংশোধনী এনে এর অপ-ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে; সব নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকা ও নেতাদের ছবিসহ নাম-ঠিকানা দেশবাসীকে অবগত করতে হবে এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে গণশুনানির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।