Uncategorized

বদলে গেল রাশিয়ার কূটনীতি

ফাইল ছবি। রাশিয়ার কূটনীতিকেরা একসময় দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পররাষ্ট্রনীতি কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছিলেন। তবে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নামে দেশটির চালানো পূর্ণ মাত্রায় হামলার পর কর্তৃত্ব হারিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের ভূমিকা ক্রেমলিনের আগ্রাসী বয়ানের প্রতিধ্বনিতে পর্যবসিত হয়েছে। সবকিছু দ্রুত বদলে গেছে।

রাশিয়ার কূটনীতি কীভাবে ধসে পড়েছে, তা অনুসন্ধানে সাবেক পশ্চিমা কূটনীতিক, ক্রেমলিন ও হোয়াইট হাউসে আগে কাজ করা ভেতরকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। তাঁদের ভাষ্য থেকে একটি ঘটনা তুলে ধরা যাক। ২০২১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড মস্কোতে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভের সঙ্গে বৈঠক করেন।

রিয়াবকভকে কয়েক দশক ধরে চিনতেন নুল্যান্ড। তাঁদের মধ্যে সব সময় যোগাযোগ ছিল। রিয়াবকভের মার্কিন প্রতিপক্ষরা তাঁকে বেশ ব্যবহারিক, শান্ত আলোচক হিসেবে জানতেন। এমনকি দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে ভরসা পেতেন। তবে বিষয়গুলো দ্রুত বদলে যায়।

ওই সময় আলোচনার টেবিলে মস্কোর রাষ্ট্রীয় অবস্থান তুলে ধরে রিয়াবকভ এক টুকরো কাগজ পড়ে শোনান এবং আলোচনা শুরু করতে নুল্যান্ডের প্রচেষ্টা প্রতিহত করেন। এতে নুল্যান্ড হতবাক হয়েছিলেন। তিনি নাকি রিয়াবকভ এবং তাঁর একজন সহকর্মীকে ‘কাগুজে রোবট’ হিসেবে হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।

এখন এটা কল্পনা করা করাও কঠিন, ২০০০ সালের দিকে পুতিন নিজেই বলেছিলেন, রাশিয়া ন্যাটোকে সহযোগিতা করবে। প্রয়োজনে জোটটিতে যোগ দেবে। তিনি বলেছিলেন, ‘ইউরোপ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকাটা আমি কল্পনা করতে পারি না।’

পুতিনের শাসনামলের প্রথম দিকে রুশ কূটনীতিকেরা পুতিনের দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন। তাঁরা চীন ও নরওয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ভূখণ্ডগত বিরোধ মেটাতে ভূমিকা রেখেছিলেন। ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা গভীর করতে আলোচনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

তবে বার্লিনে নির্বাসিত কূটনীতিক ও কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের পরিচালক আলেক্সান্ডার গাবুয়েভের মতে, পুতিন যখন ক্রমেই শক্তিশালী ও অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন, তখন তিনি নিশ্চিত হন যে তাঁর কাছে সব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে এবং কূটনীতিকদের প্রয়োজন নেই।

এরই ধারাবাহিকতায় মিউনিখে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনে পুতিনের বক্তৃতার মাধ্যমে ২০০৭ সালে নতুন এক স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রথম সংকেত আসে।

৩০ মিনিটের ওই ভাষণে তিনি অভিযোগ এনেছিলেন, কীভাবে একটা এক মেরুর বিশ্ব গড়ার চেষ্টা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। এরপর রাশিয়ার কূটনীতিকেরাও তাঁর নেতৃত্ব অনুসরণ এবং তোতা পাখির মতো তাঁর ভাষ্যটা আওড়াতে শুরু করেছিলেন।



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button