Uncategorized

ঋণের ফাঁদে আটকা পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে রায়পুরের অসহায় মানুষ! — শীর্ষ সংবাদ

ঋণের ফাঁদে আটকা পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে রায়পুরের অসহায় মানুষ! কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন, আবার অনেকেই পলাতক!

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এনজিও’র ঋণে জর্জরিত উপজেলার দিনমজুর, জেলে ও শ্রমীকসহ লক্ষাধিক অসহায় মানুষ। ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে মানসিক চাপ থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ। হামলা ও মামলার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। এই ঋণের ফাঁদে শুধু নিম্নবিত্ত নয়, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্তরাও কঠিনভাবে আটকা পড়েছেন। প্রচলিত ব্যাংকের সুদ হার কম হলেও সেখান থেকে ঋণ পাওয়া সহজ নয়। ফলে অনেকেই উচ্চ সুদহারে অপ্রচলিত, ব্যক্তি খাত এবং এনজিও থেকে ঋণ নিচ্ছেন। ঐ ঋণের সুদ আর কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে এখন তারা দিশেহারা। নিঃস্ব হয়েছেন বহু পরিবার। তবুও পরিশোধ হয়নি ঋণের কিস্তি।

আরও পড়ুন-   ভোট চুরি, দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবেঃ কাদের

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নই মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন ও বন্যাকবলিত বিশাল চরাঞ্চল এলাকা। এই উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ৫০টি এনজিওসহ বিভিন্ন সমিতির নামে ঋণ ব্যবসা করছে ২ শতাধিক সংস্থা। সম্প্রতি রায়পুর পৌরসভাসহ কয়েকটি এলাকায় নারী ও পুরুষসহ পাঁচ জন আত্মহত্যা করেছেন। ঋণ ও সুদের টাকা না দেওয়ায় হামলাসহ মারধর, লুটের ঘটনা ঘটেছে প্রায় অর্ধশতাধিক।

গত সোমবার সকালে স্থানীয় ওয়ার্ড আ’লীগ সহসভাপতি ও চা দোকানি সানা উল্লাহ (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ ঋণের টাকা শোধ করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। স্থানীয়রা ও পরিবারের সদস্যরা জানান, অর্থাভাবে সংসার চালাতে তিনি এসো গড়ি উন্নয়ন, প্রজন্ম ও রিক, আশাসহ ১৪ এনজিও থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ নেন। অভাবের কারণে তিনি ঠিকমতো ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারতেন না। প্রায়ই এনজিওর মাঠকর্মীরা বাড়িতে এসে টাকার জন্য গভীর রাত পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান করতেন এবং অপমানজনক কথা বলায় ও তা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে চাপের মুখে তিনি আত্মহত্যা করেন।

আরও পড়ুন-   কালকিনিতে আগুনে ৭ ঘর পুড়ে ছাই

গত ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় সোনাপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হায়দার আলী ব্যাপারী মোঃ সিরাজ (৩৩) নামে এক যুবক আর্থিক সংকটে পড়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিক চাপ সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। মৃত সিরাজ একই এলাকার দিনমজুর মৃত সফিক উল্যার ছেলে।

গত বছরের ২৮ অক্টোবর রায়পুর পৌর শহরের পোস্ট অফিস সড়কের বয়াতি বাড়ির সুমি আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূ এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আত্মহত্যা করেছেন। তিনি কয়েকটি এনজিও এবং স্থানীয় সমিতি থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বসতঘর নির্মাণসহ রিকশা ক্রয় করেন স্বামীর জন্য। কিস্তি পরিশোধে অপমান সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এনজিও মাঠ কর্মকর্তাদের চাপে পড়ে আত্মহত্যার একাধিক ঘটনার রয়েছে।

আরও পড়ুন-   মাধবপুরে ২৬৪ বোতল ফেনসিডিল সহ একজন গ্রেফতার

রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ বলেন, ‘এনজিওগুলো যেন গরিবের রক্ত শোষণ করছে। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক এনজিও সঠিক নিয়মকানুন অনুসরণ করে না। এমনও দেখা গেছে, কাগজে-কলমে ১০ শতাংশ সুদের কথা বলা হলেও এনজিওগুলো ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিচ্ছে। দরিদ্র মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। ঋণ গ্রহীতারা কিস্তি দিতে ব্যর্থ হলে তাদের বাড়িতে এনজিও কর্মীরা ভয়ভীতি দেখানোসহ মামলায় জড়িয়ে পুলিশি হয়রানি। ইতিমধ্যে জেলও খেটেছেন অনেকে।’

তবে- রায়পুরের মীরগঞ্জ বাজার এলাকার এসো গড়ি উন্নয়ন, প্রজন্ম, রিক ও আশাসহ কয়েকটি এনজিও কর্মকর্তা বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আমরা মানুষের উন্নয়নে ঋণ দিয়ে থাকি। তারা ঋণ দিতে ব্যার্থ হলে কর্তৃপক্ষ আমাদের বেতন থেকে ওই টাকা কেটে নিয়। আমরা নিরুপায়। তবে কোন ঋণ গ্রহীতা মারা গেলে তা মওকুফ করে দেয়া হয়।

শীর্ষসংবাদ/নয়ন

biggapon ad advertis বিজ্ঞাপন এ্যাড অ্যাডভার্টাইজ

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button