Uncategorized

যৌবনের উপহার

ন্যুট হ্যামসন একজন সম্মানীয় বক্তা আমার লেখার একটা নিজস্ব ধরনের কথা বলেছেন। আমি নিজেও বোধ হয় এটুকুই দাবি করতে পারি, তার অধিক কিছু নয়। যদিও সবার কাছ থেকেই কিছু কিছু আমি শিখেছি আর এমনকি কেউ আছেন যাঁরা কিছু না কিছু অন্যের থেকে শেখেননি?

সুইডেনের কবিতা, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের পদ্যের থেকে আমাকে অনেক কিছু শিখতে ও জানতে হবে। যদি আমি সাহিত্য এবং এর নক্ষত্রদের সঙ্গে আরও বেশি পরিচিত হতাম, তাহলে আমি তাঁদের বাক্য উদ্ধৃত করে যেতাম, তাঁদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা এবং ঋণ স্বীকার করতাম এই পুরস্কার পাওয়ার মঞ্চে। কিন্তু আমি যদি তা করি তাহলে তা হয়ে দাঁড়াবে নেহাতই বড় বড় নাম জাহির করার খেলা মাত্র। তা খুবই খেলো একটি ব্যাপার হবে, যার মধ্যে কোনো গভীরতা থাকবে না। আমি এখন এসব করার মতো ছেলেমানুষ নই। সেই শক্তি বা ইচ্ছাও আমার নেই।

বরং আজ এই উজ্জ্বল আলোর মধ্যে দাঁড়িয়ে আমি যা করতে পারি তা হলো, প্রত্যেককে আমার হৃদয়ের উপহার বর্ষণ করতে, ফুল, কবিতায় ভরিয়ে দিতে, আবার যুবক হয়ে উঠতে, তরঙ্গচূড়ায় চড়ে বসতে। এই মহান উদ্‌যাপনে এটাই করতে চাই মন থেকে। তবে সেটা করতেও সাহস হয় না, ছেলেমানুষির অপবাদে হাসিঠাট্টা হতে পারে! আজ এত সম্মান আমি পেলাম, কিন্তু একটি বাকি রয়ে গেল। একটিই, যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো, যৌবনের উপহার। আমরা কেউই তত বৃদ্ধ হইনি যে তাকে ভুলে যাব। আমাদের যাদের বয়স হয়েছে, তাদের উচিত কয়েক কদম পিছিয়ে যৌবনকে ঝালিয়ে নেওয়া পরম মর্যাদার সঙ্গে।

আমার কী করণীয় তা আমার জানা নেই, এরপর কী করা উচিত, সেটাও ছাই জানি না! তবে সুইডেনের যুবাশক্তি তথা বিশ্বের সর্বত্র যে যুবক-যুবতীরা রয়েছেন, তাঁদের উল্লাস জানাতে আমার পানপাত্র আজ তুলে ধরলাম; জীবনের যা নতুন এবং যৌবনময়, তারই উদ্দেশ্যে। 

নরওয়েজিয়ান সাহিত্যিক ন্যুট হ্যামসন ১৯২০ সালে নোবেল পুরস্কার পান।



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button