Uncategorized

ডেঙ্গুতে বাংলাদেশে মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি

ডেঙ্গুতে বাংলাদেশে মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে এ বছর ডেঙ্গুতে ৬১৮ জনের মৃত্যু হলো। তথ্য পর্যালোচনায় বাংলাদেশের চেয়ে বেশি মৃত্যুহার আর কোনো দেশে দেখা যাচ্ছে না।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২ হাজার ৩৫২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ বছর ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৪। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৬১৮ জন। সরকারি হিসাবে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ৫।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোলের (ইসিডিসি) সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বরাবরের মতো এ বছরও বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্রাজিলে। দেশটিতে এ বছর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ১১ লাখ ৮৭ হাজার ৭০৮ জনের। এর মধ্যে মারা গেছেন ৯১২ জন। মৃত্যুহার শূন্য দশমিক শূন্য ৭ ।

বেশি মৃত্যুর কারণ কী? উত্তরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক বে নজির আহমেদ বলেন, তিনটি কারণে বাংলাদেশে মৃত্যুহার বেশি হতে পারে বা বেশি মনে হতে পারে। বাংলাদেশে যারা হাসপাতালে ভর্তি হন এবং তাদের মধ্যে কতজন মারা যাচ্ছেন, সেই হিসাব দেয়া হয়; কিন্তু প্রকৃত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার সঙ্গে তুলনা করলে হারটা হয়তো কম হতো। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে একই সঙ্গে ডেঙ্গুভাইরাসের দুটি ধরন সক্রিয় আছে। এর জন্য রোগীর জটিলতা বেশি দেখা দিচ্ছে। তৃতীয়ত, হাসপাতালে রোগী ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকতে পারে। রোগীর শরীরে তরল ব্যবস্থাপনা (ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট) এবং অণুচক্রিকা ব্যবস্থাপনা ঠিক হচ্ছে কি না, তার সঠিক চিত্র জানা নেই।

বিশ্বের যেসব দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, তার পরিসংখ্যান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইসিডিসির ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। এসব দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, চলতি বছর আগস্টের শেষ পর্যন্ত মৃত্যুহার বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি।

তবে ৩১ আগস্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছেন। ৮১ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে ভর্তি হওয়ার তিন দিনের মধ্যে। এর অর্থ, যারা মারা যাচ্ছেন, তারা দেরি করে হাসপাতালে আসছেন। যখন হাসপাতালে আসছেন, তখন চিকিৎসকদের বিশেষ কিছু করার থাকছে না।

ওই পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, মৃত রোগীর ৬৪ শতাংশের মধ্যে ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম দেখা গেছে। ২৪ শতাংশ রোগীর লক্ষণ ছিল এক্সপানডেড ডেঙ্গু। ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ছিল ৮ শতাংশ রোগীর। আর মৃত ব্যক্তির ৪ শতাংশের অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের সঙ্গে ডেঙ্গুও ছিল।

এসএম



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button