Uncategorized

সমাবেশ থেকে ফিরেই সংঘর্ষে জড়াল বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ছাত্র সমাবেশ থেকে ক্যাম্পাসে ফিরেই সংঘর্ষে জড়িয়েছে রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে প্রধান ফটকে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সেলিনা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুনের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷

সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুনের অভিযোগ, ‘সভাপতির উপস্থিতিতে তার অনুসারীরা হামলা করেছে৷ এতে আমার আটজন অনুসারী আহত হয়েছে। ’

অন্যদিকে সভাপতি সেলিনা আক্তার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি রুমে ছিলাম। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে বাইরে আসি। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝামেলা মিটিয়ে দেই। তখন সাধারণ সম্পাদক সেখানে ছিলেন না।’

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রলীগের কর্মসূচি থেকে সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে ফিরলে গেটে আগে-পরে ঢাকা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে হালকা ধাক্কাধাক্কি লাগে৷ এ সময় উত্তেজনা তৈরি হয়৷ পরে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সেলিনা সেখানে উপস্থিত হন। তিনি সবাইকে ধমক দিয়ে ঝামেলা থামিয়ে দেন। সে সময় সাইমুন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের অভিযোগ, তাদের ওপর প্রথম হামলা চালায় সভাপতির অনুসারী ওহি, লাবনী, লক্ষী, শ্রুতি ও সাদিয়া৷ পরে আরও বেশ কয়েকজন মিলে হল গেটের ভেতরে টেনে নিয়ে সাত-আটজনকে মারধর করে। সংঘর্ষের ঘটনায় শাকিলা, তনিমা, শাহিনুর, দোলন, হাফসাসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিবা আক্তার সাইমুন বলেন, ‘দুই গ্রুপের কোনো সংঘর্ষ হয় নাই৷ সভাপতি সেলিনা আক্তার শেলী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই হামলার নির্দেশনা দিয়েছে৷ আজকে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম ছিল। প্রোগ্রাম শেষে আমি বাইরে ছিলাম৷ সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে ফিরলে শেলীর উপস্থিতিতে তার অনুসারীরা আমার মেয়েদের ওপর হামলা করছে। আমার গ্রুপের মেয়েদের হাত কেটে দিয়েছে, কোমরে লাথি মেরেছে, ঝাড়ু দিয়ে মেরেছে।’

আরও পড়ুন: কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ায় হল ছাড়া করল ছাত্রলীগ

তার সঙ্গে সভাপতির কোনো ধরনের মনোমালিন্য হয়নি দাবি করে সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘কেন মেরেছে আমি জানি না কিছু৷ কেন এমনটা করল এটা জানার জন্য আমি তাকে ফোন দিয়েছিলাম। সে আমার ফোন রিসিভ করেনি। আমার কর্মীরা আহত হলে সভাপতি তার কর্মীদের নিয়ে হলে চলে গেছে৷ আমর মেয়েরা মারামারি করার কোনো সুযোগই পায়নি। আমার মেয়েদের ফোন ভেঙ্গে ফেলেছে, টাকা নিয়ে গেছে।’

সংঘর্ষে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে সেলিনা আক্তার বলেন, ‘ওই রকম কোনো কিছুই হয়নি। ছাত্রলীগের সমাবেশ শেষে আমাদের কর্মীরা কলেজ গেট দিয়ে ঢুকছিল। তখন আগে-পরে ঢোকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটু কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। আমি তখন আমার রুমে ছিলাম। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আমি একাই বাইরে এসে সবাইকে ধমক দিয়ে সবাইকে সরে যেতে বলি। এই ঝামেলার সময় সময় সাধারণ সম্পাদকের একজন কর্মীর ফোন ভেঙে যায়। আমি সেটা ঠিক করিয়ে দেব বলেছি।’

আহতদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুব সামান্য ঝামেলা হয়েছে। এতে কেউ আহত হওয়ার কথা নয়। ’ সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগের বিষয়ে সেলিনা আক্তার বলেন, ‘সেখানে সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন না। একজনের হয়তো হাতের চুড়ি ভেঙে গিয়ে সামান্য কেটে গেছে। কেউ গুরুতর আহত হয়নি। এখন কেউ যদি রুমে গিয়ে হাতে ব্যান্ডেজ করে ছবি তুলে বলে আহত হয়েছে তাহলে তো কিছু করার নেই।’

কলেজের হোস্টেলের মেট্রন মোসা. তাহমিনা খাতুন বলেন, ‘ঘটনার সময় সভাপতি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। ঝামেলার শব্দ শুনে তিনি রুম থেকে বাইরে এসে ঝামেলা থামিয়ে দেন। ঘটনার শুরুর দিকে তিনি সেখানে ছিলেন না বা তিনি হামলা করেননি।’

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে ফোন দেওয়া হলে কেউ ফোন রিসিভ করেনি।



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button